Skip to main content

শুকনো ফুল, রঙিন ফুল

এই মুহূর্তে খুবই হতবিহ্বল একটা অবস্থায় বসে আছি।

আশেপাশের লোকজন আমার দিকে অত্যন্ত সন্দেহের দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে। কেউকেউতো যেন এসে ধরে মারবে এমন ভাবভঙ্গি। 

কারণ আমার পাশে এক ভদ্রমহিলা কাঁদছে। আর আমি আরেকদিকে মুখ ফিরিয়ে বসে আছি! 

শিট!! ভদ্র...মহিলা...! মহিলা কেন বলছি!

আচ্ছা... কিন্তু তাহলে কি হবে!

ভদ্র... বালিকা? কিন্তু এইটা জানি কেমন। ভয়াবহ গুরুচন্ডালী দোষে আক্রান্ত! ধু*** কোত্থেকে কি ভাবতে ভাবতে কই চলে যাচ্ছি।

মোহিনী কাঁদছে।

ফ্যাঁচফ্যাঁচ করে। 

কি অদ্ভুতভাবে কাঁদছে! 

মেয়েমানুষ কাঁদবে মায়াবী, করুণ স্বরে; রায়া যেভাবে কাঁদে! 

কোনোই মেয়েলি আবহ কি এই মেয়ের মাঝে নাই!  

এই দ্যাখো আবার চিন্তার খেই হারাচ্ছি ভেবে কষে নিজেকে গালি দিলাম, অবশ্যই মনে মনে!

কিন্তু এই মুহূর্তে আমার নিজেকে বেশ অসহায় লাগছে কারণ এই ভদ্র... মানে মোহিনী যে কাঁদতে পারে বা কাঁদতে জানে এই ব্যাপারটাই আমার কাছে অষ্টমাশ্চর্যের ব্যাপার! 

মানে এই মেয়ে হলো এমন যে, দূর্দশার সামনে সে নিজেই একটা জলজ্যান্ত দুঃস্বপ্ন, পরিণামের সামনে সে নিজেই একটা আতঙ্ক, গুলিস্তানের হেল্পারও তাকে ভয় পায়! 

সে পারেনা এহেন কোনো কাজ বোধহয় নাই! 

কয়েকদিন তার আশেপাশে কাটালে বুঝাই মুশকিল হয়ে যাবে, সে আসলে একজন প্রকৃত রমণী। 

.

আমি আজীবন দেখে ও জেনে এসেছি নারীরা হবে আমার প্রেমিকা রায়া'র মত।

নাজুক, নম্র, পলকা যাকে নিরাপদে আগলে রাখা একটা পুরুষের দায়িত্ব বলে মনে করি আমি।  

এখানেইত আমার পুরুষত্বের কারিশ্মা! 

কিন্তু এই মোহিনীকে দেখার পর থেকে প্রথমে আমি এই নারীর প্রতি যথাক্রমে বিরক্ত, তারপর  কৌতুহলী এবং সবশেষে মজার একটা চরিত্র হিসাবে দেখছি বর্তমানে। 

আমার চোখে বর্তমানে মোহিনী হচ্ছে রমণীর শরীরের ভর করা পুরুষের এক প্রেতাত্মা!  

সেই হিসেবটা এতদিন নিরেট থাকতো যদি না আমি বিরক্ত হয়ে আজকে একটা মন্তব্য করে না বসতাম। এবং সত্যি বলতে একটা না, আসলে পরিচয়ের পর থেকে এ যাবতকালের সবটা বিরক্তির পয়েন্টই একে একে হড়বড়িয়ে বলে ফেলেছি। 

মোহিনী প্রথমে অবাক হয়ে সব শুনেছে তারপর হঠাৎ করে উত্তর দিতে যেয়ে সে আটকে যায়। ওর কথা জড়িয়ে ফেলে তারপর এইযে... 

ফ্যাঁচফ্যাঁচ করে কেঁদেই যাচ্ছে। 

দু একবার সরি বলার চেষ্টা করে ক্ষান্ত দিলাম।  

মোহিনীও হেঁচকি তুলে কাঁদার পাশাপাশি তীব্রভাবে দু একটা "না" "তু" "আ" জাতীয় বিজাতীয় বর্ণ দিয়ে বোঝাতে চাইছে আমার "সরি বলার কিছু নেই। আমার মন্তব্যের কারণে কষ্ট পেয়ে সে কাঁদছে এমন না একদমই!" 

কিন্তু দুঃখজনকভাবে মোহিনীর ফ্যাঁচফোঁচের কারণে আসল কারণও জানা যাচ্ছেনা! 

এই বিপাক থেকে আমায় উদ্ধার করতেই দেবীর মত এগিয়ে এলো রায়া! এর আগে কখনো রায়ার কল পেয়ে এত খুশি হয়েছি বলে মনে পড়েনা!

.

ইয়ে... মানে এমন ভাবার কোনো কারণ নেই যে রায়া আর আমার সম্পর্কে কোনো চিড় আছে।

খুবই মজবুত আমাদের সম্পর্ক, শীঘ্রই বিয়ে হবে আমাদের। 

কিন্তু অই ম্যাচিউর টেকসই সম্পর্কগুলো যেমন হয় আরকি, রায়া এখনো আগের মত করেই সব পেতে চায় কিন্তু আমার ক্যারিয়ার, বিয়ে, ফ্যামিলি নিজের শারীরিক বিপর্যয় সব মিলিয়ে একটু দিশা বেদিশা অবস্থা হয়ে যাই মাঝেমধ্যে।

যে সময়টায় আসলে রায়া'র আবদার অনাচারকে মধুর চেয়ে বিরক্তিকর লাগে বেশী। 

পরে অবশ্য সেজন্য নিজেকে গালিও দেই। 

মেয়েটা আমাকে অনেক ভালবাসে। এতদিনের সম্পর্ক, কত কম্প্রোমাইজ, কত স্যাক্রিফাইস...

আর এখন এরকম অল্প চাপে ভেঙে পড়লে কিভাবে হবে! 

যদিও স্বীকার করতে চাইনা নিজের কাছে, তবে মাঝেমধ্যে আসলেই ক্লান্ত লাগে সবকিছুতে। 

বিশেষত মোহিনীর সাথে পরিচয় হবার পর ওর মনে হয়, জীবনের কতটুকু আমি আসলে নিজের ভালো, সুখের কথা ভেবেছি? 

কতটুকু আমি কেবলই নিজের জন্য ভালো থেকেছি?

যেই সিদ্ধান্তই নিয়েছি হয় পরিবার, নয়তো প্রেমিকা নয়তো ভবিষ্যৎ প্রজন্মের (যারা বিয়ের পর আসবে) চিন্তাতেই! 

পরক্ষণেই আবার নিজেকে ধমক দেই! কি অদ্ভুত সব চিন্তা।

পরিবার, প্রেমিকা, বিয়ে এসব কি পর নাকি!

সবইত আমার নিজের! 

 আশ্চর্যতো! কি সব উদ্ভট চিন্তাভাবনা! 

কিন্তু তবুও... 

তবুও মনের কোথাও খুবই গহীনে চিন্তাটা থেকে যায় "এত আয়োজনের মাঝে, কেবলই আমার অস্তিত্ব কোথায়!" 

.

এইযে... আবারও! 

কোথায় থেকে কোথায় চলে যাচ্ছি! রায়ার ধমকে সম্বিত ফিরে। 

ঃ রেজওয়ান! আশ্চর্য!  কথা শুনছো তুমি?

ঃ এহ সরি! হ্যাঁ কি যেনো...

ঃ বলছি তোমার পৌঁছাতে কতক্ষণ লাগবে। আমি বের হবো! 

ঃ আধাঘন্টা পরে বেরোও, আমি আসছি। 

ঃ ঠিকাছে, দেরি করোনা কিন্তু! 

এইযে কি সুন্দর, নির্ভর করে আমার উপর। 

ওকে বাসা থেকে নিয়ে বের হই, ঘুরাঘুরি করে ওর বাসায় দিয়ে যাই আবার। 

আর এইটা যদি মোহিনী হয়... এ যেমন আজকেইত! একটা কাজ ছিল ওর সাথে। ফোন দিয়ে বললো 

ঃ রেজওয়ান শুনেন। টিএসসি বসবো ঠিকাছে। শাহবাগ আসেন। আমি ওখান থেকে আপনাকে তুলে নিব! 

আরে! এটা কোনো কথা! এটাতো আমার বলার কথা যে-

 "মোহিনী, মিরপুর রোডে এসে দাঁড়ান, যাবার সময় আমি আপনাকে তুলে নিব!"

যাইহোক, এখন আপতত কিভাবে এই কান্নারত মোহিনীর থেকে বিদায় নেয়া যায় তা ভাবতেই যাচ্ছিলাম। 

না না!  আমাকে অমন হৃদয়হীন পুরুষ ভাববেন না যে, এক মেয়ে কাঁদছে যার কাঁদার কারণের কিছুটা (অথবা  সম্ভবত পুরোটা) দায় আমার, তাকে সান্ত্বনা না দিয়ে উলটো সটকে পড়তে চাইছি! 

আসলে তাকে সান্ত্বনা দেয়ার মত ভয়াবহ অবস্থায় পড়তে চাচ্ছিনা। কি বলতে কি বলে ফেলি, তার আত্মসম্মানে লেগে গেলে সেটা সামলানো হবে আরেক কেয়ামত! এরচেয়ে সটকে পড়াই ভালো! 

পরক্ষণেই মনে হলো সে "ঠু মাচ কনসিডারেট!" আমার ভাবনার কোনো কারণ-ই নাই! ভাবতে না ভাবতেই মোহিনীবিদ্যা স্ট্রাইক্স! 

ঃ কে রায়া? (নাক মুছতে মুছতে চামড়ায় তুলে ফেলেছে বোধহয়। মাথা ঝাঁকালাম) নাকটাক টেনেটুনে আবার কথা বললো, নাক বন্ধ হয়ে গেছে বোধহয় কাঁদতে কাঁদতে।

"অঁসুবিঁধা নাঁই! (ফুড়ৎ করে আবার নাকের টান) আঁপন্নি যাঁন। আঁমিতোঁ বাঁসাঁতে যাবগা এম্নেওঁ! (ফুড়ুৎ!)

আরো কি কি যেন বলছে।

কিন্তু আমার ওসব কানে যাচ্ছেনা। 

গোলগোল গরুর মত চোখ কেঁদেকেটে আরো ফুলিয়ে ফেলা, বোঁচা নাক মুছতে মুছতে (অথবা ঘষতে ঘষতে) লাল করে ফেলা, পড়ন্ত দুপুরের রোদে চোখের আশেপাশে চিকচিক করতে থাকা চোখের পানি...

এই মোহিনীকে দেখে হঠাৎ বুকে ধাক্কা লাগলো। 

বেশ জোরেই। 

কেমন যেন!

মনে হচ্ছে আমার হার্টটকে একটা মুঠিতে চিপে ধরে আছে কেউ! 

ঠিক ব্যাখ্যা করা যায়না। 

এই মুহূর্তে মোহিনীকে নিজের কাছে নিয়ে বুকের ভেতর লুকিয়ে রাখতে ইচ্ছে করছে। ইচ্ছে করছে... ইচ্ছে করছে যেনো...

নিজের অজান্তেই হাত বাড়িয়ে দিলাম। কি ধরতে চাইছি জানিনা। 

ঃ রেজ...ওয়ান!! 

সম্বিত ফিরলে দেখি মোহিনী আমার বাড়ানো হাতের দিকে দ্বিধান্বিত হয়ে তাকিয়ে আছে। 

"আচ্ছা ঠিকাছে! সাবধানে যাবেন!" বলেই আমি আর দাঁড়ালাম না, হাঁটা দিলাম। 

মাথা ঝিমঝিম করছে। 

রোদের কারণে বোধহয়!   

.

এখন এই রাতে বসে বিড়ি ফুঁকতে ফুঁকতে আমার আবারো দুপুরের কথা মনে পড়ছে। 

আমার বক্তব্যের মূল কথাই ছিল যে "মোহিনী, আপনি খুবই রোবোটিক। আশেপাশের লোকজনকে আপন ভাবেননা একেবারেই।" 

আমি তাকে কিছু একটা উপহার দিলে সে ব্যতিব্যস্ত হয়ে যায় পাল্টা উপহার দিতে, যেন এটা একটা ঋণ। 

৮/১০ কেজি ওজনের মত ভারী জিনিস সে একাই বইবে তবুও আমি আশেপাশে থাকলেও সে ধরতে দেবেনা! 

বাসে উঠলে আমাকে বসতে বলে সে দাঁড়ায়ে থাকবে। 

কোথাও কোনো খরচ যেমন ভাড়া বা খাবারের বিল আমি দিব বললেই সে তৎক্ষনাৎ আমাকে হাফ টাকা দিতে উঠেপড়ে লাগে যেখানে তার পকেটে অনেক সময় আসলেই টাকা থাকেনা।

শুরু শুরুতে আমার এই ব্যাপারটা ভালোই লাগতো কিন্তু পরে এসে কেন যেন খুব বিরক্ত লাগা শুরু করে। 

সম্ভবতঃ এতদিন পরে আশা করেছিলাম মোহিনী আমাকে কিছুটা হলেও আপন ভাববে।

 আমার উপর এরকম সামান্য সামান্য ব্যাপারে একটু হলেও নির্ভর করবে। 

অথবা... আমি জানিনা আমি আসলে কেন এই ব্যাপারগুলা নিয়ে এত বিরক্ত।

কিন্তু আমি চাই রায়া, আমার বোন বা মায়ের মত মোহিনীও আমার উপর নির্ভর করুক। 

এখন উপলব্ধি করছি আসলে কেনো মোহিনী করেনি কখনো। 

মোহিনীকে আমি অনেক কথা বলেছি। উপদেশ দিয়েছি, এসব এটিট্যুড ইম্প্রুভমেন্টের জন্য বলেছি; অথচ মোহিনী একবারও সাফায় গায়নি। 

কেবল বলেছিল- 

"রেজওয়ান! কি জানেনতো... নির্ভরশীল হওয়াটা একটা বদ অভ্যাস। একবার এ অভ্যাস হয়ে গেলে এটা থেকে বের হতে পারবোনা। আর আপনিতো আমার জীবনে আজ আছেন কাল নেই। ভাবুন একবার এই বদ অভ্যাস হয়ে গেলে আপনি যখন চলে যাবেন তখন আমার কি ভয়ানক অসহায় অবস্থা হবে!" 

.

কি আতঙ্কজনক ব্যাপার! 

মেয়েটা কি আজীবনই এমন ছিল!

একা একাই সব করেছে সবসময়? 

একাই বস্তা টেনেছে, একাই বাসে চড়া শিখেছে, একাই কেঁদেছে, একাই ভাড়া নিয়ে ঝগড়া করা শিখেছে?

একাই ব্যথার উপশম খুঁজেছে? 

আচ্ছা ওর অসুখ হলে কি করতো? 

একদিনের কথা মনে পড়লো।

তখন মাত্র পরিচয় ওর সাথে। অনেক জিনিসপত্র সাথে নিয়ে বাসায় ফিরছিল। ঠিকমতো গেলো কিনা সেইটা খোঁজ নিতে ফোন দেয়া উচিৎ কিনা ভাবছিলাম। আবার ফোন নাম্বারও নেই।

শেষে যখন ফোন দিলাম খুবই ক্ষীণ আর জড়ানো কণ্ঠে কথা বললো। 

বুঝলাম ঘুমাচ্ছে। 

উনার অবস্থা জিজ্ঞেস করতেই দু এক কথায় জানালো জ্বর, গলাব্যথা। পড়ে ঘুম যাচ্ছে; খাওয়া নাই, অষুধ নাই! অষুধের কথা বলতেই বলে 

"এসবে আবার কেউ অষুধ খায় নাকি! দুদিন ঘুমালেই সেরে যাবে।" 

আমি কেন যেন আরো একটুক্ষণ কথা বাড়াতে চাচ্ছিলাম কিন্তু প্রসঙ্গ নেই। হঠাৎ জড়ানো কণ্ঠেই মোহিনী বললো, 

 আর রেজওয়ান! জীবনে যে কাজটা করবেন না, তা হইল আমারে নিয়ে কোনোদিন টেনশন করা। তবে থ্যাঙ্কিউ। খোঁজ নেয়ার জন্য, টেনশন করার জন্য। আমার ভালো লাগসে!" 

তখন ভাবিনি, এখন ভাবি; মোহিনীর মত অসাধারণ একজন মানুষের জীবন এতটা ভালবাসাহীন কিভাবে হয়!

আর তা সত্ত্বেও সে এত প্রাণ-প্রাচুর্যে ভরা প্রাণচাঞ্চল্য নিয়ে কিভাবে রোজ বেঁচে থাকে। 

আরে আশ্চর্য!

আমার চোখে পানি কেনো!! 

মোহিনীকে দেখতে ইচ্ছে করছে।

কিন্তু আমার ভ্যালিড একটা কারণ লাগবে সেজন্য। নাহলে অস্বস্তিকর সব প্রশ্ন করবে! 

.

ঃ রেজওয়ান!! এত রাতে! 

ঃ হাই! টার্বোকে নিয়ে লম্বা সময় হাঁটতে বের হয়েছিলাম। ব্যাটা খুবই আইলসা হয়ে যাচ্ছে। ভাবলাম আপনার সাথে দেখা করায়ে দেই আপনার  দোস্তের। 

আরররেএএএ টার্বো ব্রোওওওও... চকচকে চোখে মোহিনী লাফায়ে পড়ে টার্বোর উপর। 

টার্বো'ও ঘেউ ঘেউ করে তার দ্বিগুণ খুশি জানান দেয়! 









আমি একপাশে দাঁড়িয়ে আরেকটা সিগারেট ধরায়ে ওদের খেলা দেখি!  

Comments

  1. এটার নেক্সট পার্ট আসবে?

    ReplyDelete
    Replies
    1. বোধহয় না।
      ছোট গল্প।

      Delete
    2. প্যাটার্ন টা সুন্দর, ইফ ইউ ওয়ান্ট ইউ ক্যান এক্সটেন্ড ইট। 🤔

      Delete
    3. একবার ভেবেছিলাম। অল্প ফর্মার ছোট বই করে ফেলা যায়।
      আবার ভাছি, ক্লিশে স্লাইস-অফ-লাইফ স্টোরি না হয়ে যায়!

      Delete

Post a Comment

Popular posts from this blog

Music of Memories

  There are many songs, musical bands, and singers, which are related to certain memories and every time I listen or remember them, they remind me of those memories and times regardless of how old they are, they are still as vivid. Like, now after a long time, when I was listening to Linkin Park, it reminded me of the tender, precarious memories of my college days (11th&12th grade), plausibly the best memories of my academic life overall. Every song of Linkin Park reminds me of someone or something of those fragmented foregone days. When I was at the age of starting to learn about music appreciation, the world of music was rather very very concise and territorial in my country. I am referring to the time when broadband internet services were not available in our country yet and people would do a good business in just selling DVD, cassettes to music enthusiasts. Certainly, living in the suburbs of the city, in a culture where music is not much of a concern for daily life and not...

চৈত্রে সংক্রান্তি!

শর্টকার্ট বাজার আর চালু রান্নার চিন্তা নিয়ে বাজারে গেলেও, নজরকাড়া সবুজের কচি পুঁইশাকের টসটসে আঁটিটা দেখে পা যেন ওখানেই আটকে গেলো। প্রথম দেখায় প্রেমে পড়ার মতো। নতুন বাসায় আসার পর, কাঁচা বাজারে এখনো পা রাখা হয়নি। অবশেষে সারাদিন ঘুমিয়ে পেটে যখন ছুঁচোর কের্তন শুরু হলো, উঠে চোখেমুখে পানি দিয়ে, ঝিমাতে ঝিমাতে মানিব্যাগ হাতে নিয়ে গেঞ্জিটা গায়ে চাপিয়ে নীচে নামলাম। মাসের শুরু হলেও, মানিব্যাগের অবস্থা শোচনীয়। ভাবতে লাগলাম কি কেনা যায়, যাতে করে এই মাসে ৩/৪ বার রান্না করা যাবে এই এক বাজারেই। ভাবলাম মুরগী/গরুর মাংস নিয়ে নিব, ল্যাঠা চুকে যাবে। কিন্তু খুব সব্জিটব্জি খেতে ইচ্ছে করলো, সারা সপ্তাহ বিফ/চিকেন খেয়ে মুখে অরুচি চলে আসছে রিতীমতো। সারা মাসে ৩/৪ বার রহস্য হচ্ছে প্রতি সপ্তাহে আমি একদিন রাঁধি, দুইদিন খাই। আর সাধারণত দিনে একবেলা খাই। এখন এই একবেলা খাই শুনে আপনার কল্পিত "ডায়েট"এর ধারণাকে প্রশ্রয় দেবেননা। এটা আসলে রান্নার আলসেমির কারণে। সপ্তাহের ৫ দিন আপিসে লাঞ্চ দেয়, সাথে দেয় টুকটাক নাস্তা, আর যত মন চায় তত চা/কফি। রুটিন এমন হয়েছে যে, খাই কেবল যতক্ষন কাজের মাঝে থাকি। বাসায় ফিরে ঘুম, ঘুম থেক...

এই যে ক্ষণিকা শোনো...

  মানুষকে নিয়ে গল্প জুড়তে আমার জুড়ি নেই। মানে একেবারে যাকে বলে, বলা মাত্রই লিখে ফেলবো কিছু একটা। সাহিত্য অবশ্যি হবেনা কিন্তু গল্প হয় বৈকি। বিশেষ করে মানুষের প্রেম, জীবন, দর্শন নিয়ে আমার লিখতে বেশ লাগে। আমি দারুণ এক শ্রোতা। এত চমৎকার একটা আবহ দিয়ে যে দুদিনের পরিচয়ের মানুষও আমার কাছে তাদের গল্পের ঝুলি খুলে বসে যেটা হয়তো তাদের খুব আপন মানুষটিও জানেনা। যদিও পরবর্তীতে তাদেরকে সান্ত্বনা স্বরূপ বলা আমার নিখাঁদ সৎ মন্তব্যকে কেন্দ্র করে বেশ বিড়ম্বনায় পড়তে হয়, তবুও কেউ আমার কাছে এলে, কখনো "না" বলতে পারিনা। কথা বলতে না পেরে হাঁসফাঁস করা মানুষগুলোর জন্য আমার ভীষণ মায়া হয়। খুব কাছ থেকে মানুষের গল্প শুনলে বুঝা যায়, আমরা কত ক্ষুদ্র দর্শনকে জীবন ধরে নিয়ে দিনানিপাত করছি। যখন উচ্চমাধ্যমিকে পড়তাম হঠাৎ একবার খুব কবিতা লেখবার ঝুম ওঠে। আদপে কবিতাতো নয়, ওটাকে কোবতে বলাই শ্রেয়! ক্লাসে আমার কোনো নির্দিষ্ট সখা-সখী'র দল ছিলোনা অমনা। আমি ছিলাম সবার সাথী ধরণের। কেউ আমার জন্য বেঞ্চে জায়গা রাখবে, অন্যকে বসতে দেবেনা, আমার জন্য টিফিনের সময় অপেক্ষা করবে অমন বন্ধু বান্ধব আমার ছিলোনা। এতে বরং আমি বেশ আরামেই...